ময়মনসিংহ সদর উপজেলার অষ্টধার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৃষ্টিভেজা একটি ফটোসেশন ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। আলোচিত এই ঘটনায় বিদ্যালয় পরিদর্শনে যাওয়া সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হারুন সিকদারকে ছাতার নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেলেও, পাশে থাকা কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বৃষ্টিতে ভিজে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একাধিক ছবিতে দেখা যায়, কর্মকর্তার মাথায় ছাতা থাকলেও একাধিক শিশুর মাথায় নেই কোনো ছাতা বা বৃষ্টিরোধী ব্যবস্থা। ছবি পোস্ট হওয়ার পরই তা নেটিজেনদের নজরে আসে এবং মুহূর্তেই সমালোচনার ঝড় ওঠে।
বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ও অভিভাবকেরা বিষয়টিকে ‘অমানবিক’ ও ‘অপ্রয়োজনীয়’ বলে আখ্যা দেন। একজন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “শ্রেণিকক্ষে ছবি তোলা যেতো। শিশুরা বৃষ্টি খেয়ে অসুস্থ হলে দায় নেবে কে?”
একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, “ফটোসেশন যদি করতেই হয়, তাহলে আগে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা উচিত ছিল। একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার কাছ থেকে এমন আচরণ কাম্য নয়।”
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “ছাত্রছাত্রীরা ভিজেছে, বিষয়টি আমাদেরও কষ্ট দিয়েছে। তবে ওপর থেকে নির্দেশনা আসায় আমরা কিছু বলতে পারিনি।”
এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হারুন সিকদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যেকোনো ফটোসেশন বা লোকদেখানো কার্যক্রমের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
একজন অভিভাবক বলেন, “শিশুরা ভিজছে, আর কর্মকর্তা ছাতার নিচে এই ছবিই যেন আজকের প্রশাসনিক বাস্তবতা। এটা কষ্টদায়ক।
শিশুদের প্রতি দায়িত্বশীলতা ও মানবিক আচরণ প্রত্যেক শিক্ষা কর্মকর্তার নৈতিক দায়িত্ব। ভবিষ্যতে যেন এমন পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেই প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের।
Leave a Reply